সুনামগঞ্জ , শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫ , ১৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বিএনপিতে চাঁদাবাজের ঠাঁই নেই : মাহবুবুর রহমান ৯ মাসে ছয়শ’র বেশি ধর্ষণ এনসিপির কেন শাপলাই চাই? সুনামগঞ্জে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হলো শারদীয় দুর্গোৎসব ৪০০ ছাড়িয়েছে কাঁচা মরিচ, শতকের কাছাকাছি বেশিরভাগ সবজি ‎জামালগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুর্গাপূজা দেখার হাওর ঢেকে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে উকিলপাড়ায় পাইপলাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস নির্গমন : দুর্ঘটনার আশঙ্কা দুর্গাপূজা : মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য পূজামন্ডপ পরিদর্শন করলেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি ৩ ফার্মেসিকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা পথে যেতে যেতে: পথচারী সুনামগঞ্জ পৌর শহরে স্পিডব্রেকারগুলো যেন মরণফাঁদ! ‎জামালগঞ্জে 'উন্নতি সঞ্চয় ঋণদান সমবায় সমিতির' শিক্ষা উপকরণ ও  বস্ত্র বিতরণ সুনামগঞ্জে 'ধর্ষণ মামলায়' আসামিদের শাস্তির দাবিতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন নির্বাচনের প্রস্তুতি অনেক এগিয়ে নিয়েছি : সিইসি আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদন্ড আজীবন জনগণের সেবা করতে চাই : পাবেল চৌধুরী ফার্মেসিতে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে ‘ফিজিশিয়ান স্যাম্পল’

লোককবিদের স্মৃতিচিহ্ন রক্ষায় উদ্যোগী হতে হবে

  • আপলোড সময় : ২৭-০৭-২০২৫ ০৮:৫৫:২৩ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০৭-২০২৫ ০৮:৫৫:২৩ পূর্বাহ্ন
লোককবিদের স্মৃতিচিহ্ন রক্ষায় উদ্যোগী হতে হবে
‘লোকে বলে বলেরে, ঘরবাড়ি ভালা না আমার’ - অমর মরমি কবি দেওয়ান হাসন রাজার এই আত্মবিন্যস্ত গানের পঙক্তির মতোই আজ সত্যি হয়ে উঠেছে তাঁর শূন্যতাময় পৈতৃক জমিদার বাড়ির অবস্থা। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা গ্রামে অবস্থিত এই প্রভাবশালী জমিদার পরিবারের ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্ন এখন ধ্বংসের মুখে। বাংলা সাহিত্যে এবং আধ্যাত্মিক চর্চায় হাসন রাজার অবদান অবিস্মরণীয়। শুধুই একজন জমিদার নয়, তিনি ছিলেন বাউল-ভক্ত, আধ্যাত্মিক সাধক, মরমী কবি এবং গণমানুষের ভাবজগতের ভাষ্যকার। অথচ তাঁর জীবনঘনিষ্ঠ স্মৃতি, তাঁর বসতভিটা আজ পড়ে আছে অবহেলায়, অযতেœ - একটি লতাগুল্মে ঢাকা ধ্বংসপ্রায় ভবন, দরজা-জানালাবিহীন দুটি কক্ষ, একটি দীঘি ও পারিবারিক কবরস্থান - এসবই দাঁড়িয়ে আছে এক করুণ অপেক্ষায়। এ দুঃখ শুধু একটি বাড়ির নয়, এটি আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনার ক্ষয়িষ্ণু দৃষ্টান্ত। শুধু হাসন রাজাই নন, এই হাওর অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে আছেন বহু মরমী সাধক, বাউল, বৈষ্ণব কবি ও সুফি কবিদের পদচিহ্ন - যাদের গানে, সাধনায় গড়ে উঠেছিল লোকধর্ম, সহনশীলতা ও মানবিকতার ঐক্যসূত্র। কিন্তু হতাশার বিষয়, এই ইতিহাস সংরক্ষণে নেই সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ, নেই সংস্কৃতিমনা নেতৃত্বের আন্তরিকতা। বিশ্বনাথের ইউএনও সুনন্দা রায় জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হলেও উত্তরাধিকারীদের অভ্যন্তরীণ জটিলতা এবং অনাগ্রহের কারণে অগ্রগতি হয়নি। প্রশ্ন হচ্ছে - একটি জাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কি শুধুই ব্যক্তিগত মালিকানার দ্বারস্থ থাকবে? রাষ্ট্রের কি কোনো দায় নেই এই মহামূল্যবান স্মৃতিচিহ্নগুলো রক্ষা করার? আমরা দাবি জানাই, হাসন রাজার রামপাশার পৈতৃক বাড়ি দ্রুত সংস্কার ও সংরক্ষণের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় এটি সংরক্ষণ করে একটি লোকসংগীত গবেষণা কেন্দ্র, মরমি সংগ্রহশালা বা আধ্যাত্মিক সাংস্কৃতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। সুনামগঞ্জ ও সিলেট অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মরমি কবিদের স্মৃতিচিহ্ন যেমন রাধারমণ দত্ত, দুর্বিন শাহ, শাহ আবদুল করিম, সৈয়দ শাহনূরদের ঘর-বসতিও একইভাবে সংরক্ষণযোগ্য। বাংলার লোকজ ইতিহাস কেবল বইয়ের পাতায় নয়, জড়িত রয়েছে জীবন্ত স্থাপনা, পদচিহ্ন ও ঐতিহ্যে। আজ যদি আমরা তা হারিয়ে ফেলি, কাল আর শুধুই ফাঁকা গান গাইতে হবে- ‘ঘরবাড়ি ভালা না আমার...”। এই দেশ, এই মাটি, এই গান - সবই আমাদের। দায়িত্বটাও আমাদেরই।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স